তীব্র গরম, কাঠফাটা রোদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। সূর্য ওঠার পরপরই চড় চড় করে বাড়তে থাকে তাপমাত্রার পারদ। কিন্তু এই কাঠফাটা রোদ এবারের বৈশাখে কৃষকের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রবিবার কালিয়াকোটার হাওরে কৃষক ফয়েজ মিয়া এমনটাই ব্যক্ত করছিলেন।
তিনি বলেন, এবারের বৈশাখে আকাশ থেকে আগুনের মত ঝরে পড়া রোদে ধান যেমন তারাতারি পেকে যায় ঠিক তেমনি রোদের প্রচণ্ড তাপদাহে ধান দ্রুত শুকাতে পেরেছে কৃষক পরিবারের সদস্যরা।
ফয়েজ বলেন, আমাদের এই হাওরে আমরা কখনও লামায় ট্রাক্টর বা অন্য কোন ধরণের গাড়ী নিয়ে যেতে পারিনি। অন্যান্য বছর বৃষ্টির পানি জমে থাকত ফলে হারবেষ্টার মেশিন দিয়ে কাটতে বা গাড়ী দিয়ে পরিবহন করতে কষ্ট হত। তবে এবছর হাওরে ব্যতিক্রম। ধানকাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সরেজমিনে কালিয়াকোটা, বরামসহ বিভিন্ন হাওরে ঘুরে দেখা যায়, এ বছর হাওরে বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপদাহ ও গরম হাওরের ধান দ্রুত পাকতে সাহায্য করেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় হাওরের ধান ছিল শুকনো। রাস্তাঘাটও ছিল কম কর্দমাক্ত। ফলে হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে দ্রুত ধান কেটে সহজেই ট্রাক্টর, টলি বা ইঞ্জিনচালিত যান দিয়ে তারা বাড়ি নিয়ে এসেছেন এবং তা দ্রুত শুকিয়ে গোলায় তুলতে সক্ষম হয়েছে।
কৃষক রানু পুরকায়স্থ বলেন, খড়া থাকার সুযোগে আমাদের কালিয়াকোটা হাওরের জটিচর, কাইমা, মধুপুর, দলুয়া, গচিয়া, অনন্তপুর, মির্জাপুর অংশেই ১১-১২ টি কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে কৃষক দিন ও রাতে ধান কেটে প্রায় শেষ পর্যায়ে।
কৃষক মুক্তার মিয়া জানান, গত বছরের অকাল বন্যায় বেশকিছু হাওর ডুবে গিয়ে শতশত কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এবছর এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান কাটা ও শুকাতে কোন সমস্যা হয়নি। সামান্য জমির ধান কাটা বাকী আছে, আশাকরি তাও ভালো ভাবে তুলতে পারব। তবে তিনি ধানের ন্যায্যমূল্য দাবি করেছেন সরকারের কাছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন অধিকারি জানান, এবছর উপজেলার ছোট বড় ১০ টি হাওরে ৩০ হাজার হেক্টর বোরো জমি আবাদ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৯ ভাগ ধান কর্তন করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৭ মেট্রিক টন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/হিল্লোল/এসডি-০২