হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার ১ নম্বর উত্তর-পূর্ব  ইউনিয়নের কাজী মহল্লার সফল কৃষি উদ্যোক্তা এনামুল হক। প্রতিবছর নিজের জমি এবং কিছু জমি লিজ এবং ইজারা নিয়ে নানান রকমের সবজির আবাদ করে থাকেন তিনি। এবছর অন্যান্য সবজির পাশাপাশি অন্তত সাত কানি জমিতে নাগামরিচের আবাদ করে এলাকায় রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এনামুল হক। 

সরেজমিন তার নাগামরিচের ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, সম্পূর্ণ দেশীয় জাতের সবুজ এবং লাল রঙের  নাগামরিচ ঝুলছে গাছে। নাগামরিচের ভারে একেবারে নুয়ে পড়েছে কোনো কোনো গাছ। নাগামরিচের ব্যাপক ফলন হয়েছে তার জমিতে। শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে নাগামরিচ সংগ্রহ করে বস্তাবন্দী করছেন। এনামুল হকের নাগমরিচের ব্যাপক ফলন দেখে এখানকার কৃষকদের অনেকেই নাগামরিচ চাষের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। 


এনামুল হকের ক্ষেতে উৎপাদিত নাগামরিচ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগান দেওয়া হচ্ছে। 

এনামুল হক জানান, সাত কানি জমিতে নাগমরিচের আবাদ করতে তার খরচ হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। ইতোমধ্যে আনুমানিক ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার নাগামরিচ বিক্রি করেছেন তিনি। এখান থেকে আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা মুনাফা অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বানিয়াচংয়ের অন্যতম এই সফল কৃষি উদ্যোক্তা। 

এনামুল হক আরও জানান, গত পাঁচ বছর যাবৎ অল্প পরিমাণে পরীক্ষামূলকভাবে নাগামরিচের আবাদ করছিলেন তিনি। গতবছর সফল হয়ে এবার তাই জমির পরিমাণ বাড়িয়ে সাত কানি জমিতে নাগামরিচের আবাদ করেছেন। নাগামরিচের বাম্পার ফলনে আনন্দিত এবং বিস্ময় প্রকাশ করে এনামুল হক বলেন, “নাগামরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে আমার ক্ষেতে। এত ভালো ফলন হবে আমি কখনও ভাবিনি। তাছাড়া, বাজারে আমার নাগামরিচের চাহিদাও বেশি।” 

এক প্রশ্নের জবাবে এনামুল হক জানান, শুরুতে প্রতি কেজি নাগামরিচ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করলেও বর্তমানে বাজারে পর্যাপ্ত হওয়ায় দাম কমে বর্তমানে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি। আর নাগামরিচ বিক্রির জন্য তাকে কোথাও যেতেও হয় না। ঢাকাসহ বিভিন্ন বড়বড় শহর থেকে পাইকাররা তার ক্ষেত থেকে নাগামরিচ কিনে নিয়ে যান।

তিনি আরও জানান, “সম্পূর্ন দেশীয় পদ্ধতিতে জৈবসার প্রয়োগ করে দেশী জাতের নাগামরিচের আবাদ করেছি। চারা রোপণের ২ মাস পরেই ফলন এসেছে। আমার ক্ষেতের নাগামরিচ দেখতে যেমন আকর্ষনীয় তেমনি ঝালে, স্বাদে-গন্ধেও অতুলনীয়। তাই বাজারে এর চাহিদাও বেশ ভালো।”

বানিয়াচংয়ের বড়বাজারের সবজির আড়তদার ইসরাইল মিয়া। এনামুল হকের নাগামরিচের নিয়মিতভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে থাকেন তিনি। তিনি জানান, এনামুল হকের ক্ষেতের নাগামরিচের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ক্রেতাদের কাছে। দেখতে আকর্ষনীয় এই নাগামরিচ শুরুতে প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করতেন তিনি। তবে বর্তমানে বাজারে নাগামরিচের প্রচুর যোগান থাকার ফলে প্রতিকেজি ১৫০-২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন এনামুল হকের এই নাগামরিচ। 

এনামুল হকের নাগামরিচ পাইকারি দরে কিনতে চাইলে যে কেউ তার নিম্নোক্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / জসিম / ডি.আর