সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্রলীগের গ্রুপভিত্তিক অন্তর্কোন্দলের জেরে মধ্যরাতে উত্তপ্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রভোস্ট বডির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

 


রাতেই ছাত্রলীগের গ্রুপের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ কোন্দল মীমাংসা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

 

হলের আাবসিক শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দুই বছর ধরে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। এসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছয় গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে তারেক হালিমী নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রুপের বর্তমানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইংরেজী বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম সীমান্ত।

 

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় সীমান্তের সাথে তার সমর্থক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রহমানের 'হলের ভর্তি' বিষয়ে বাগ-বিতন্ডা' হয়। 

 

এরপর রাতেই সীমান্তের বিরুদ্ধে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দেন মিজানুর। তবে হল প্রধাক্ষের মাধ্যমে পরেরদিন শুক্রবার দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি মীমাংসা হয়। এদিন সন্ধ্যায় সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে বিষয়টি মীমাংসের ইঙ্গিত দিয়ে আপত্তিকর লিখা পোস্ট করেন সীমান্ত; এর জেরে পরেরদিন শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুডকোর্টে ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান, সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক সজিবুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহসভাপতি মামুন শাহ ও যুগ্ম সম্পাদক সুমন মিয়া ওই ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সীমান্তকে ডাকেন। তাদের মধ্যে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। 

 

এ ঘটনার পর রাতে সীমান্ত ও বাকি চার নেতার গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। 

 

এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় সহকারী প্রক্টরের উপস্থিতিতে সীমান্ত ফেসবুক পোস্টটি এডিট করেন। তার ফেসবুক পোস্ট থেকে 'আপত্তিকর' মন্তব্যটি বাদ দেওয়া হয়।

 

এর কিছুক্ষণ পরে হলে ওই চার নেতার সমর্থক ও সীমান্তের সমর্থকদের মধ্যে আবার উত্তেজনা দেখা দেখা দেয়। উভয়পক্ষকে জিআই পাইপ নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা। 

 

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামরুজ্জামান চৌধুরী ও শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট মিজানুর রহমান খান এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা। 

 

এ বিষয়ে আজিজুল ইসলাম সীমান্ত সিলেটভিউ’কে বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ একটা ঝামেলা হয়েছিল। প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রভোস্ট বডি সমাধান করে দিয়েছে। এখন সব সলভ্ড (সমাধান)।’

এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাননি তিনি। 

 

শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটা এলাকায় আমরা ছিলাম। হলে নাকি ঝামেলা হয়েছে শুনে হলে আসি। এসে কর্তপক্ষ সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। 

 

 তিনি কোনো ঝামেলায় জড়াননি বলে দাবি করেন এ নেতা। 

শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট মিজানুর রহমান খান  বলেন, 'বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। দু'পক্ষের সঙ্গেই আমরা কথা বলেছি। এখন তারা কথা দিয়েছে আর কোনো ঝামেলাই জড়াবে না।'

একইকথা বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামরুজ্জামান চৌধুরী।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/নোমান/ইআ-১১