সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উদ্বোধনের ৬বছর পর দেয়া হলো ২টি গাড়ি সহ অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম।
 

বুধবার দুপুরে ২টি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি স্টেশনে প্রবেশ করতে দেখা যায়। সেই সাথে যেসব কর্মীরা অন্য স্টেশনে কর্মরত ছিলেন সেসব কর্মীরাও স্টেশনে আসেন।


তারা এখন থেকে স্থায়ীভাবে এই স্টেশনে কাজ করবেন বলে জানা গেছে।

তবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নতুন দু'টি গাড়ি নিয়ে সাধারণ মানুষের রয়েছে ভিন্ন মত।
 

এব্যাপারে শাল্লা সদর (ঘুঙ্গিয়ারগাঁও) বাজারের সেক্রেটারি সুবীর সরকার পান্না জানান, প্রধানমন্ত্রী দেশের সব উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন তৈরি করেছেন আগুন থেকে জনগনের জান মালের নিরাত্তার জন্য। উদ্বোধনের প্রায় ছয় বছর পর গাড়ী ও যন্ত্রপাতি আসায় আমরা খুব খুশী। তবে বর্ষা মৌসুমে রাস্তার অভাবে এই গাড়িগুলো কাজে আসবে না। যখন রাস্তা হবে তখন জনগণ ফায়ার সার্ভিসের সুফল পাবে।
 

এবিষয়ে সুখলাইন গ্রামের বাসিন্দা মৃদুল কান্তি দাশ বলেন, গাড়ি দু'টি এসেছে আনন্দিত হয়েছি। কিন্তু এই গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তা তো নাই। শাল্লা সদরে কিছুটা কাজে লাগলেও গ্রামাঞ্চলে কোনো কাজে লাগবে না। তাছাড়া বর্ষাকালে তো কোনো কাজেই লাগবে না এই গাড়িগুলো।

 

উপজেলায় রাস্তাঘাট না হলে এসব গাড়ি স্টেশনেই পড়ে থাকবে বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে হাওর বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাশ বলেন,  স্টেশন থেকে গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় দু'শ মিটার রাস্তাটি বর্ষায় তলিয়ে যায়। সেই রাস্তায় দুই থেকে তিন ফুট পানি থাকে। তাহলে খুদ সদরেই তো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। আর গ্রামে তো এই গাড়ি কাজেই লাগবে না।
 

এবিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, শাল্লা উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চালু হয়েছে। আজ (২৭ মার্চ) দুটি গাড়ি এসেছে। একটি পানিবাহি অন্যটি সরঞ্জামসহ জনগণ পরিবহনের জন্য। এটি চালু হলে শাল্লাবাসীর যে দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সেটি পূরণ হবে। এই উপজেলায় একটি দুর্ঘটনায় ঘটলে যে একটা ক্রাইসিস হত সেটিরও নিরসন হবে আর দিরাই থেকে শাল্লার যে রাস্তার চলমান আছে। আশাকরি ৬থেকে ৭মাসের মধ্যে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি শাল্লা থেকে জলসুখা পর্যন্ত রাস্তাটি হয়ে গেলে সেদিকেও মুভ করতে পারবে। নতুন রাস্তাগুলোও বাজারকে অ্যাবাউট করে করা হচ্ছে।

বাজারে অবৈধ কোনো দোকান কোঠা থাকলে তা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন শাল্লা উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি। ফায়ার সার্ভিসের কাজ তখনও অসমাপ্ত ছিল। পরে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছিল সংশ্লিষ্টদের। তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছিল বিভাগীয় ব্যবস্থাও। কিন্তু গেল ৬বছরে ফায়ার সার্ভিসের ডজন খানেক কর্মী নিয়োগ দেয়া হলেও তাদের দেখা যায়নি স্টেশনে। দু'একজন কর্মী স্টেশনে বসে বসে বছরের পর বছর অলস সময় পার করছিল। বাকি কর্মীরা জেলার অন্যান্য স্টেশনগুলোতে কাজ করেছেন। এরমধ্যে  উপজেলায় বেশকিছু অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে গাড়িসহ অন্যান্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি না থাকায় কোনো কাজে আসেনি এই স্টেশনটি।
 

গাড়ী হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন- শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহসান, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জশোবন্ত ভট্টাচার্য, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন কর্মকর্তা রিপন মোল্লা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা প্রমুখ।



 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/সন্দীপন/এসডি-১৩৫৬