নিশ্চয় কুব দুক ফাইয়া-উ আমরার কবিয়ে লেকিছলাঃ “বন্ধু গো! বড় বিষজ্বালা এই বুকে/দেখিয়া-শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি/তাই, যাহা আসে কই মুখে”।


এবলা আমার নতুন কিছু খতাখানাইন খই। প্রায় বছরখানেখ আগে আমার এখ সহকর্মিয়ে আমারে খইছলা: “তুমি তো বাক্কা লেখালেকি খরো, কিন্তু মদিনা মার্কেটর ফুবর রাস্তার ঈ গজবর খতা লেখ না খেনে”? আইজ কিন্তু আমি লেখতে বাধ্য অইলাম।



মদিনা মার্কেটর টিক ফুবে-উ প্রায় ১০০ আত রাস্তা বছরখানেখ আগে কূব বাঙ্গা আছিল্।  বন্ধুর খতা হুনিয়া ফয়লা-উ দুই ফত্রিকা অফিসো ফোন খরলাম। খইলাম, “ও বাইসাব, ওউ যে ১০০ আত রাস্তা,,,,, ইবায়দি আফনারা কোনদিন আইন না নি? বড় বড় ডেউ খালাইল গাতওখল ‘গু-মুত‘-র ফানিয়ে বরা। ড্রেইনর খাম ছলের, তা তো বুযলাম, কিন্তু ১০০ আত জাগার হখলতা শেষ খরতে ৬ মাস লাগে নাকি? আজ খমফক্ষে ৬ মাস যায়ের। ‘গু-মুতর‘ ফানি ছানিয়া মানুষ আওয়া-জাওয়া খররা, মসজিদোও নমাজো জাইতরা, গাড়ি-গোড়ার ফানির ছিটায় খাফড়-ছুফড়-ফাও-জুতা  তো, মাশাল্লা, নমাজ তো এখ ফালে আসমানো, গাড়িত বইয়াও উফায় নাই। গাড়ি যেন বইছালে ফালায়। এখন হুকনার দিন, অইলে কিতা অইব? সারা এলাখার ‘গু-মুতর’ ফানি তো বারোয়ের-উ। গাড়িত বইয়াও দুর্গন্দর জালায় নাখো মুইট খরিয়া দরা লাগে। গাড়ির বাম্পার, ছাক্কার ছিবায় ছিবায়, গাড়ির তলাত ‘গু-মুতর’ ফানি হুকায়, হুকাইলেও দুর্গন্দ তো তাখে-উ। খেও খেও গাড়ি ফড়তি দিন দওয়াইন, যারার ফয়সা খম, তারা নিজে নিজে দইন”। ২ ফত্রিকা অফিসতনে-উ খৈইলা: তারা লেখালেকি খরছইন, খরইন - এর মাজেউ খাম আরম্ব অইব”।


গোল্লাত জাউক হখলর খষ্ট।  হুনলাম-বুজলাম, অনেখে-উ মাতইন। কিন্তু খাম তো আরম্ব অয় না। তবে ৩ মাস খষ্ট দিয়া খাম আরম্ব অইল প্রায় আরো ৩ মাস বাদে, অর্থাৎ, খষ্ট ফুরা ৬ মাস। তারফরে খাম ছলা অবস্তার খষ্টর তো সীমা নাই। তবে অনুমান ৬ মাস আগে খাম শেষ অইছে। আর,  ঈ ৬ মাস যাইতে না যাইতে-উ আবার আগর অবস্তা। ড্রেইন অয়ায় দুর্গন্দ তাকি বাছলাম বটে, কুব কুশিও অইছলাম। কিন্তু ইবারর মেগ আরম্ব অইতে না অইতে-উ এখন আবার গাত আর গাত, তবে ধৈন্যবাদ ইন্জিনিয়ার সাবওখলোরে, ড্রেইনোর ফানি বন অয়ায় দুর্গন্দ তাকি আমরা এলাখার মানুষ বাচ্চি। কিন্তু গাতোর কিতা অইত, গাড়ি কি-ই না মজার মজার ডেউ খালায়। দৈন্যবাদ জানাই আমরার বিশেষজ্ঞ-অবিজ্ঞ ইন্জিনিয়ার সাবদেরকে, অত বালা বালা টেকসই রাস্তা তারা বানাইতা ফারইন, যেতা First-World countryর ইন্জিনিয়ারওখলেও বানাইতা ফারতা নায়। রইদ-ফুড়া খাইয়া তারা রাস্তা বানাইন, তারারে আমরার শুকরিয়া।


বিদেশে-বিদেশে দেখছি, রাস্তার খাম অইলে রাস্তা আগ তাকি আরো উছা অয়, কিন্তু কি মজা – আমরার রাস্তাওখল অয় আরো নিছা। এই ফুড়া-খফাল এখেবারে গেছে ফাটানটুলার ফুব ফর্যন্ত। আমরা আজীবন বিশ্ববিদ্যালয়গুলুত ইন্জিনিয়ার বানাই। অনেখ ইন্জিনিয়ার আছলা আমার বন্দু , বিদেশ শিক্ষকতার সময়। দেশোও আছইন ছাত্র-ইন্জিনিয়ার, বন্দু-ইন্জিনিয়ার শ’ শ’। কলিগ-ইন্জিনিয়ার আছইন দর্জন-দর্জন, খারে খইতাম খরাফ। না, না, ফুড়া খফাল অইলো ফাটানটুলার, আর মদিনা মার্কেটর। সিটিত ফোন খরলে তারা খইন, ইতা খাম এলজিআরডি-র, হিকানো ফোন খরলে তারা খইন, ইতা অংশ তারার খাম নায়, ইতা খাম Roads and Highways-এর। খয়েখদিন আগে দেখলাম, বোদয় কোন শরম লাইগছে, এর লাগি ই দুই জাগার গাতওখলরে কিছু বালি-মাটি দিয়া গুরিয়া-বরিয়া দিছইন। কিন্তু মেগর দিন তো, এর লাগি দুই দিনে-উ আবার আগর জাগাত। গাড়ির কি মজার ফালানি, মনে অয়, যেন হুরুতাইনতর দোলনা। সাবাস, ইন্জিনিয়ার সাবওখলরে, তারা অত সুন্দর সুন্দর মাগনা মাগনা দোলনা বানাইয়া দিছইন।


আর, এখটু বেশি মেগ অইলে-উ গাড়িওখলে ফানিত হাতরায়, আটকিলে এখ সিএনজি ফাজ্জনে টানিয়া তুলইন, বিজা খাফড়ে আবার গাড়িত উটিয়া বইন। কোন সময় দেখা যায়, এখ লাইনো ফানি বেশ অইলে সব গাড়ি অন্য লাইন দিয়া বাউ সাইড দরিয়া যায়। কোন সময় বওয়া অবস্তায় খমর ফর্যন্ত বিজে। আহ্ দারুন মজা। এখদিন এখ বেটার ফেন্টর ফকেটর সব টেখা, আইডি কার্ড- হখলতা বিজিয়া শেষ। কিন্তু তার দৈর্য আছিল- এর লাগি ছিল্লাইছেনা,  তবে মা-বাফ তুলিয়া কুব গাইলাইছে। আমরার ডাইবারওখল কুব এক্সপার্ট। তারা টেলাইয়া-দাক্ষাইয়াও গাড়ি ছালাইন, এর লাগি এক্সিডেন্টও অয় না। আরো দেখলাম,  তারার মাজে কুব মহব্বত। এখজনর গাড়ি আটকিলে হখলে সাইজ্য খরইন। আমরার ফেসেন্জাররাও খত বালা, তারাও লামিয়া দাক্ষা দেইন। ফানির মাজে গাড়ি উল্টা ছালাইলেও খেউ কোনতা মাতইন না। আহ্! আমরা খত না বদ্র। আমরার মত ইলা বদ্র মানুষ লণ্ডনোও ফাওয়া যাইত নায়। এখন আমি আমার প্রিয় সিভিল ইন্জিনিয়ারদেরকে উদ্দেশ্শ করে কিছু কথা বলতে চাইঃ


একদিন মাস্টার্স-ক্লাশে ঢুকে দেখি, ভেতরের দেয়ালে নতুনভাবে লেখা রয়েছে: “Common men discuss people” (অর্থাৎ, সাধারন মানুষ একত্র হয়ে অন্যের গীবৎ করে), ”average men discuss events” (গড়ে অধিকাংশ মানুষ শহরে-বন্দরে, হাঁটে-বজারে, রাস্তাঘাটে, নদ-নদী-সাগরে-খেলার মাঠে কি ঘটল, তা নিয়েই আলাপে মশগুল থাকে), ”but, great men discuss ideas” (আর, বড় বড় জ্ঞানী-বিজ্ঞানী-বুদ্ধিজীবিগণ উচ্চ-চিন্তা, উচ্চ-গবেষণা, নতুন নতুন জ্ঞান-আবিষ্কার, নতুন ধারণা-স্বপ্ন বাস্তবায়ন, নিত্য-নতুন সুউচ্চ ভাবণা নিয়ে জীবন কাটান মানবতার কল্যানে)।


অতএব, আজকের স্নেহ-ভাজন-শ্রদ্ধেয় প্রকৌশলিগণকে আমি বলতে চাইঃ রাস্তা-ঘাট তো মামুলি জিনিস, দয়া করে আপনারা আজ থেকেই  আপনাদের চিন্তায় গতি বড়ান, নতুন নতুন আবিষ্কারে নেমে পড়ুন।


মনে করুন, উদাহরণ-স্বরূপঃ “সিলেট-ঢাকা গোটা হাইওয়ের ৪০০/৫০০ কিলোমিটারের  নিচে থাকবে সুৃৃ..দীর্ঘ স্বচ্ছ পানির গভীর লেক, উপরে থাকবে স্বচ্ছ-শক্ত মার্বেল পাথরের বড় বড়-আস্ত-আস্ত ব্লকের ঢালাই, নিচের পানিতে পরিষ্কার দেখা যাবে, সাঁতার কাটছে হরেকরকম মাছের ঝাঁক, আর, তারই উপর দিয়ে গড়-গড়, গড়-গড় মিষ্টি-মধুর শব্দ করে করে চলছে আন্ত:জেলা গ্রীনলাইন-সোহাগ-শ্যামলি-হানিফ নামক মানব-বহনকারি হাজারো ব্রাণ্ডের বিরাটকায় বাসগাড়ি। যাত্রীরা মৎস্য সাঁতার উপভোগ করে করে সিলেট থেকে রাজধানিতে পৌঁছবেন মাত্র কয়েক ঘন্টায়।


আর, একইরকম হাইওয়ে ও লেক হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাজশাহীসহ সকল আন্তঃজেলা রুটে। এক বাংলাদেশ-ই তখন গোটা পৃথিবীর মানুষকে মাছ খাওয়াতে পারবে, যে ভাবে আজ এক সুনামগন্জ একা-ই গোটা বাংলদেশের ২০% মানুষের অন্ন যোগায়।  


দেখুন, বাবাজি প্রকৌশলিগণ, প্রকৃতপক্ষেই এগুলো সম্ভব, আজ না হয় কাল। আমার চলছে ৬৮। হয়ত/নিশ্চয় আমি দেখতে পারব না। তবে ভবিষ্যতিরা দেখবে। কারণ, বিজ্ঞান এখনো দুগ্ধ-পূষ্য শিশুমাত্র, হামাগুড়ি দিতে তার এখনও অনেৃৃক দেরি। আর, আমার এ লেখা কোন সায়েন্স-ফিকশন নয়, এটা সাহিত্য-বান্ধব, মানব-জীবন-ভিত্তিক প্রেক্টিকেল ফিকশন। কারণ, সাহিত্য হচ্ছে আধুনিক, অপরদিকে, বিজ্ঞানের সবকিছুই ”Latest Model”. আর যাকিছুর-ই চিরন্তন আবেদন বা universal appeal থাকে না, বা সময়ে সময়ে যা বদলায়, তা কখনো আধুনিক হতে পারে না। যেমনঃ “আঁখির দিগন্তে মোর কুহেলি ঘনায়/বিদায়ের বংশী বাজে, বনধুগো বিদায়”, অথবা, “যেতে নাহি দিব, হায়!/তবু যেতে দিতে হয়/তবু চলে যায়” অথবা, “আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা, ফুল তুলিতে যাই/ ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামার বাড়ি যাই” অথবা, ”আগে যদি জানতামরে বন্ধু পিরিতির এত জালা, নারে যাইতাম কদম্ব তলে, নারে গাঁথিতাম মালা”।  


অথবা, “The paths of glory lead but to the grave=গৌরবের সকল পথ আমাদেরকে শুধুই কবরের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে”, অথবা “One short sleep past, we wake eternally/And, death shall be no more/O Death! thou shalt die,=ক্ষণিকের ঘুম (মৃত্যু) শেষ হওয়ার পরপরই আমরা জেগে উঠব চিরদিনের জন্য, আর মৃত্যু থাকবে না, হে আজরাঈল! মৃত্যু হবে তোমার (আমরা মানুষ হয় থাকব সর্গে, আর না হয় নরকে, আমাদের আর কখনো মৃত্যু হবে না, বরং হে আজরাঈল, আপনি-ই মরনশীল, মরবেন আপনি, আমরা না),”  অথবা, “I shall see the universe in the palm of my hand”= “বিশ্বটাকে দেখব আমি আপন হাতের মোঠয় পুরে”, অথচ, কবি ডরষষরধস ইষধশব ও কবি নজরুলের মধ্যে প্রায় ২৫০/৩০০ বছরের ফারাক, দেশ দেশান্তর ও ভাষার ফারাক। কিন্তু কি আশ্চর্য মিলই না কবিদের চিন্তায়!


এ হচ্ছে সাহিত্য। আর তাই, বিজ্ঞান, সাহিত্যকে অনুসরনই করে, যেমনঃ “শিশিরে ভিজে না মাটি বৃষ্টি না এলে/ফোনেতে ভরে না মন দেখা না হলে”।

লেখক :  প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ, বর্তমানে প্রিন্সিপাল, ক্যামব্রিজ গ্রামার স্কুল এণ্ড কলেজ, হাউজিং এস্টেট, পূর্ব পীরমহল্লা, সিলেট। সাবেক প্রতিষ্ঠাকালীন ২৪ বছরের বিভাগীয় প্রধান, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।