:: প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ::
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উঠিয়ে দেয়ার সময় বোধ হয় অনেক পূর্বেই চলে এসেছিল। তবে অপেক্ষা করছিলাম, দেখি সামান্যতম কোন গ্রীন-সিগ্নাল আসে কি না। আজ লিখতেই বাধ্য হলাম।
আমাদের শিক্ষামন্ত্রণালয় কি সত্যিই কোন বিপদে আছে? মাস-কয়েক পূর্বে পত্রিকায় দেখেছিলামঃ ৭ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নেই। দেশে কি পণ্ডিতের এতই অভাব পড়ল? অথচ, সরকার-সমর্থক বাঘা বাঘা পণ্ডিতে দেশ ভরা।
কয়েকদিন আগে পত্রিকান্তরে দেখা গেল, শুধুই বৃহত্তর সিলেটের প্রাথমিকে সহকারি শিক্ষকের ১৩৭৯টি পদ শূন্য। দেশে-বিদেশে অধ্যাপনায় আজ আমি ক্ষুদ্র এ শিক্ষক ৪৬ বছরে ঢুকেছি। একমাত্র, গোটা বাংলাদেশের মধ্যে সিলেটের স্বনামধৈন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েই একটানা ২৭ বছর। অতীতের কোন দিনে আজকের মত নিরাশ-হতাশ কখনো হই নি। শুনেছি সব সময়, এত এত পদ খালি, এতজন গেছেন ট্রেনিং-এ, অমুক প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষার্থী-সংখ্যা ৫০০-র উপরে, তবে শিক্ষক আছেন ঢের বেশি, অর্থাৎ, মাত্র দু’জন (‘মাশাল্লাহ’ বলতেই হয়, তাই না প্রিয় পাঠকবৃন্দ)! জানি না, এ দুঃখ কোথায় রাখা যায়। খবরের কাগজ পড়ার সময় পাই খুবই কম। তবে একদিন পড়লামঃ অমুক উপজিলায় শিক্ষা অফিসারের পদ ৬টি, তবে আছেন অনেক বেশি=দু’জন।
সবাই আমরা জানি, কোন কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এক এক অজো পাড়াগাঁয়ে। মনে করি, ওখানকার দু’জন শিক্ষকের বাড়ি ৫/৬ মাইল দূরে। অজ পাড়াগাঁয়ের রাস্তাঘাট, আবারও ‘শাশাল্লাহ’ বলতেই হয়। তাই ঐ শিক্ষকরা স্কুলে আসেনই না। ঐ পাড়াগাঁয়ের এসএসসি/এইচএসসি পাশ বেকার ছেলেদেরকে উনারা কিছু টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেন, আর মাস পুরলে নিজেদের পুরো বেতনটা উঠিয়ে নেন। আহ! কি সুন্দর ম্যানেজমেন্ট! আহ! কি সুন্দর বেকারত্বের সমাধান উনারা দিচ্ছেন! উনাদেরকে অবশ্য-অবশ্যই পুরস্কৃত করা উচিৎ! অবশ্য তার আগে পুরষ্কৃত করা উচিৎ প্রাথমিক শিক্ষা-অধিদপ্তরকে। কারণ, তারাও ম্যানেজ করছেন কেমন সুন্দরভাবে!
একই দৃশ্য দেখা যায় উপজিলাগুলোর মেডিকেলে। পদ-সংখ্যা ৮/৯ টি। আছেন হয়ত ৬ জন ডাক্তার। উনারা অধিকাংশ সময় থাকেন শহরে। দু’তিন দিন গেলেন অফিসে হয়ত দু’ঘন্টার জন্য। বেতন ঠিকই উঠান। নার্স, এসিস্টেন্টরাই নাকি ডাক্তারের কাজ চালান। আবার, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের হুমকি-ধমকিও মাঝে মধ্যে পত্রিকান্তরে নজরে আসে। কিন্তু ঐ মনত্রণালয় বোধ হয় অসহায়, তাই তো কোন ফল আসে না।
উপরে উল্লেখিত ১৩৭৯ টি পদ, মাত্র একটি বিভাগের জেলাগুলোতে শূন্য রেখে, সরকার কি টাকা বাঁচাবার চেষ্ঠা করে? এখন, বিভাগ যদি ৭টি হয়, তাহলে সরকারি তহবিলের ১৩৭৯X৭=৯,৬৫৩ জন শিক্ষকের বেতনের টাকা বাঁচে। এটা চাট্টিখানি কথা না। যখন যে সরকারই আসে, এই টাকা দিয়েই কি তাদের উন্নয়নের এত আস্ফালন? হেঁ, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, তবে, মেরুদণ্ড তো থাকেই পিছনে, তা আমরা সবাই জানি। প্রত্যেক সরকারেরই উন্নয়নের দোহাই। উন্নয়ন আসে কিন্তু সময়ের ব্যবধানে–যা অনেকটা প্রাকৃতিক; যেমন, দু’কেজি ওজনের নবজাত শিশু ৭০/৮০ বছরে হয়ে উঠে ৭০/৮০ কেজি। এই বৃদ্ধির পেছনে তার স্বীয় কোন ক্রেডিট নেই বললেই চলে। আবার, উন্নয়ন আসে মানব-সম্পদ বৃদ্ধির কারণে, যার সঠিক ব্যবহারও অতীত-অভিজ্ঞতা-প্রসূত, এটাও প্রাকৃতিক। উন্নয়নের আরো একটি চাবিকাঠি হচ্ছে বিশ্ব-মানবের সম্মিলিত বিশ্বায়ন। আহ্ ! উন্নয়ন! আমার তিক্ত অভিজ্ঞতাঃ গত শতাব্দির (১৯৯০ এর পরে) শেষ দশকের প্রথমদিকে বিদ্যুতের জ্বালাতনে আমি ৩ টি ল্যান্টর্ন ক্রয় করতেও বাধ্য হয়েছিলাম।
এবার কথা আসুক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উৎপাদিত উচ্চ ডিগ্রিধারী গ্রাজুয়েটদের মান নিয়ে। এই উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি মানসম্পন্ন গ্রাজুয়েট বের করতে না-ই পারে, তবে এগুলো পুষে লাভ কি? সবগুলো বন্ধ করে দিয়ে আমরা সবাই মিলে একত্রে প্রতিবন্ধী হয়ে বসে থাকতে পারি, তখন আর কোন বাদাবাদিও থ্কবে না। আমি স্বয়ং একজন নিকটাত্মীয় এমএ পাশ প্রার্থীর কথা জানি। সে কমপক্ষে ৫ বার প্রাইমারি-শিক্ষক পদের জন্য সাক্ষাৎকার দিয়েছে। এ ‘আদুভাই’, পরীক্ষা দিতে দিতে ইন্টারভিউ বোর্ডে যারা থাকেন, তাদের প্রায় সব ক’জনকেই চিনে ফেলেছে। আমি জিজ্ঞেস করায় সে জবাব দিল: ডিসি সাহেব, শিক্ষা-অফিসার, আরো কে কে থাকেন। সকলেই এত এত ক্রিটিক্যাল প্রশ্ন করেন, উত্তর দেবার মত নয়, সবই আমাদের পড়াশোনার বাইরে থেকে। আর, সাক্ষাৎকার বোর্ডে সব সময় আরও একজন থাকেন, অমুক কলেজের একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর। প্রার্থীটি উনার নাম বল্লেও আমি নিজে উনাকে চিনতে পারিনি। সে বল্ল, ঐ প্রফেসর নাকি সব সময় চুপচাপ থাকেন, কোন প্রশ্নই উনি করেন না। ভাবলাম, আমলাদের সামনে অবসরপ্রাপ্ত একজন কলেজ-শিক্ষক যে আসতেই পেরেছেন, বসতেই পেরেছেন, এতেই তো তার জীবন ধৈন্য। ‘জি হুজুর’ বলার মত একজন প্রফেসর তো পাওয়া গেল।
তারপর ঐ ছেলেটা কোন্ বিদেশে যেন পাড়ি জমিয়েছে। দুঃখ লাগে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যে সমস্ত গ্রাজুয়েট বের করি, তারাই তো এমপি হয়, মন্ত্রী হয়, ‘আমলা’ হয়, সবাই মিলে দেশ তো তারাই চালায়। এই গ্রাজুয়েটদের অনেকেই বিদেশে গিয়ে বিদেশকেও চালাচ্ছে। তাই, অবশ্যই এরা মানসম্পন্ন। পুড়া কপাল শুধু প্রাইমারি, মাধ্যমিক এবং সরকারি কলেজ পর্যায়ের শিক্ষকদের বেলায়? শুধু এরাই সাক্ষাৎকার বোর্ডে ফেল করে! আমি স্বয়ং বিদেশে ১৪টি দেশের শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছি দীর্ঘ সাত বছর ধরে। আমার আবিষ্কার=আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের মেধা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওদের চাইতে “ফা…র, ফা….র ব্যাঠার” (অনেক অনেক বেশি মেধাসম্পন্ন)। আমি নিজে আমার স্বীয়ি ইংরেজি বিভাগসহ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং বাংলাদেশের অনেকগুলো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্ততঃ ১০০ টি নিয়োগবোর্ডে বসেছি। আমার পরিষ্কার অভিজ্ঞতা হয়েছেঃ এমনও প্রার্থী আছে এবং থাকে, যাদেরকে সাক্ষাৎকার বোর্ডের সদস্য বানালে, তারাও তাদের সাক্ষাৎকার বোর্ডের অনেক সদস্যকেও ফেল করাতে পারবে অনায়াসে – এমন অনেক জ্ঞান তারাও রাখে। তাই, একটি সাক্ষাৎবোর্ডের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ কত বেশি জ্ঞানী, তা আজও আমার বোধগম্য হয় না।
মনে পড়ছে একজন এডিসি জেনারেলের কথা। উনি একটি বেসরকারি কলেজের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গোড়ার দিকের কথা। এখানে ‘ইংরেজি বিভাগ’ খোলার পূর্বে আমি একাই ছিলাম ইংরেজির শিক্ষক। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে কোম্পালসোরি ইংরেজি ভাষা কোর্স পড়াতাম। বিভাগের সংখ্যা বেড়ে গেলে একা আর পারছিলাম না। মাননীয় ভিসি মহোদয়ের পরামর্শে উপরোক্ত কলেজ-শিক্ষককে খণ্ডকালীন হিসেবে আনলাম। সময়মত বিসিএস দেয়ার জন্য উনি বিদায় নিলেন (অবশ্য পরে ইংরেজি বিভাগে অনেক পোষ্টই ক্রিয়েট করা হয়েছে)। তার অনেক বছর পর একটি কাজে আমি এডিসি জেনারেলের অফিসে গিয়েছিলাম। ঢুকতেই অগ্রিম সালাম দিয়ে “স্যার, আসেন-আসেন, বসুন প্লিজ, এদিকে কি কাজে আসলেন স্যার,…..”ইত্যাদি। আমিও ভালভাবেই উনার পরিচয় পেয়ে গেলাম। তারপর অনেক কথাবার্তা, চা…….। এক পর্যায়ে তিনি বললেন, “আমি তো স্যার অমুক স্কুলের সভাপতি, আজকেই ক্লাশ থ্রি-র ভর্তি-পরীক্ষা নিলাম, এই দেখুন স্যার, ইংরেজির প্রশ্ন, আমি নিজেই বানিয়েছি…..”। উনিই প্রশ্নগুলো পড়ে আমাকে শুনাতে লাগলেন। “সুন্দর হয় নি স্যার”? এমনভাবে বলা, আমি প্রসংশা না করে পারলাম না। হাতে সময়ও ছিল কম, অধিকন্তু আমার ঐ কাজটা উনার অফিসের ছিল না, যাওয়ার পর তা জানলাম।
কুশল বিনিময় করে অভিনন্দন জানিয়ে বেরিয়ে আসলাম। কিন্তু আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল ক্লাশ থ্রি-র ভর্তি-পরীক্ষার ইংরেজির ঐ প্রশ্নসমূহ, যা ক্লাশ ফাইভ-সিক্সের শিক্ষার্থীরাও উত্তর লিখতে পারবে কি না। ভাবলামঃ দিন তো বদলায়, তবে মানুষ বুঝি রাতারাতি আরও বেশি বদলায়।
আরও একটি মজার স্মৃতিচারনঃ বিভাগীয় শিক্ষা-অফিসার (প্রাইমারি) এলিট সমাজের মিটিং আহ্বান করেছেন। আমিও দাওয়াত পেলাম। গিয়ে দেখি–অনেক বড় মিটিং, ঢাকা থেকেও কর্তাব্যাক্তিরা এসেছেন, প্রায় সকল প্রাইমারি হেড-টিচারগণও উপস্থিৎ। লাঞ্চসহ সকাল-বিকাল ২ শিফ্টের মিটিং। শিক্ষামূলক আলোচনা তো ছিলই, কিন্তু প্রাইমারি লেভেলের অট্টালিকার বাহারি উন্নয়ন-পুঁথি যেন শিক্ষার আলোচনাকে ম্লান করে দিয়েছিল। বুঝা গেল, অট্টালিকা বানানোর বাইরে আর যেন কোন স্কুলই রইল না। যা-ই হোক, আমার আলেচনায় হাউজকে একটি বার্তাই দিয়েছিলামঃ অট্টালিকা নির্মান হয়েছে, হচ্ছে, যেটাতে সরকার অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার, তবে প্রতি বছর পাল্লা দিয়ে হাওরে-বাওরে যত প্রাইমারি স্কুল গজাচ্ছে–তাতে আত্মতৃপ্তির কোন সুযোগ নেই, আর শিক্ষক কয়জন–তা-ও অগ্রিম বিবেচ্য বিষয়; আর, আমরা আমাদের নিজেদের সময়ে গাছতলায় পড়েই এ পর্যায়ে আসতে পেরেছি।
সেদিন পত্রিকায় দেখলাম – জগন্নাথপুর উপজিলা সদরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রী-সংখ্যা ৩৫০। তবে শিক্ষক দ্বারা স্কুল ভর্তি – মাত্র একজন, তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং নাইট গার্ডের দায়িত্বেও আছেন। ১ মাস ধরে স্কুল বন্ধ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে–এটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শিক্ষার্থী-অভিভাবক হতাশ-নিরাশ-বিক্ষুব্ধ। স্কুলটি সরকারিকরন হয় ১৯৮৭ সালে। ৩৪/৩৫ বছর বয়সেও আজ তার এই হাল। আহ, উচ্চশিক্ষা! ঢাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত সাত কলেজের ২০১৫–১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীগণ পরীক্ষার দাবিতে রাজধানীর জনপথ-গণপথ অবরোধ করছে।
একবার এক সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলাম। প্রধান শিক্ষক সাহেব দুঃখ করে বললেন, পদ আছে ২৭ টি, তবে শিক্ষক আছেন অনেক অনেক বেশি=মাত্র ৯ (নয়) জন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার হাল এতই সুন্দর! করোনা তো আসল সেদিন। আমার কথাগুলো এর আগের।
পল্লীগ্রাম থেকে নিজে উঠে এসেছি। আজও বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে পল্লী অঞ্চলেই যওয়া পড়ে বেশি। এই তো সেদিন এক অনুষ্ঠানে গিয়ে হিসেব করে দেখি=প্রাইজ পেয়েছে ৬৭ জন মেয়ে, আর ৩০ জন ছেলে। নিজ পল্লীগ্রামে নিজস্ব এবং পারিবারিক-অলাভজনক-দাতব্য কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও নিজে উঠেপড়ে লেগে ২ ইউনিয়নে দু’টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। মধ্যে মধ্যে শনিবারে গিয়ে আমি মোটিভেটিং ক্লাশও নেই। দুঃখের কথা বলে আর লাভ কি? ক্লাশে মেয়ে যদি পাই ৪০ জন, ছেলে পাই ১৩ জন। মেয়েরা হচ্ছে উচ্চশিক্ষিত–ঢের আনন্দের সংবাদ, তবে ছেলেরা যাচ্ছে কোন পথে? সরকারকে সক্রিয়ভাবে ভেবে দেখার অনুরোধ কছি।
শেষ কথাঃ আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রিধরিী গ্রাজুয়েটরা জনপথে-গণপথে (রাজপথে নয়, কারণ, আমদের কোন রাজা নেই) বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে বিপথগামী হবে, আত্মহননের পথ বেছে নেবে, ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরবে, বিয়ে করতে পারবে না, পরিবারের উপর বোঝা হয়ে থাকবে, অথচ, স্কুলে শিক্ষক থাকবেন একজন, পাসপোর্ট অফিসে জনবল থাকবে একপঞ্চমাংশ–এগুলো কোন ধরনের দর্শন? ঈভ্-টিজিং, ধর্ষণ, গণ-ধর্ষন, গাঁজা-ইয়াবা, নেশাকরন, ছিনতাই–সবই বহাল তবিয়তে আছে, বেকারত্বের অভিশাপে ৯৫% বেকার ছেলেরাই এগুলোতে লিপ্ত। আইনও আছে, পাশাপাশি উভয়টাই রেললাইনের মত সমান্তরালভাবে চলছে। দেশে যেখানে যত পদ আছে, সবগুলো ফিল্ড-আপ করেন, দেখবেনঃ প্রার্থীই পাওয়া হবে দুষ্কর। উচ্চশিক্ষিত নারী বনাম “ব-কলম” পুরুষ, দেখবেন–সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যা দিন দিন প্রকট থেকে আরো প্রকট আকার ধারন করছে। আদপেই নেতিবাচক নয়, ২০০% ইতিবাচক মনোভাব এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে, ১০০% বাস্তবতার ভিত্তিতে আমার আজকের এ লিখা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়ঃ “সত্য যে কঠিন, (কিন্তু) সে কখনো করে না বঞ্চনা”।
_________________________________________________________________________________________________________
লেখকঃ প্রফেসর ড. মোঃ আতী উল্লাহ (পিএইচ.ডি.-ইংলিশ), প্রিন্সিপাল, ক্যামব্রিজ গ্রামার (ইংলিশ) স্কুল এণ্ড কলেজ, সিলেট (এবং প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক ২৪ বছরের বিভাগীয় প্রধান, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট )।