কৌশলে সহজ-সরল নারীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলো তারা। ‘ফু’ দিয়ে টাকা দ্বিগুণ করার প্রলোভন দিয়ে ১১ দিনে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষাধিক টাকা। বারবার চোখে ধুলো দিয়ে রয়ে যাচ্ছিলো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। একটি সিএনজি অটোরিক্সার নির্বাচনী পোস্টারের সূত্র ধরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এই চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করেছে রাজনগর থানার পুলিশ। বুধবার সকালে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার কামারচাক ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের রায়না বেগম সোনালি ব্যাংকের তারাপাশা বাজার শাখা থেকে টাকা নিয়ে বের হলে এক ব্যাক্তি নিজেকে মাজারের খাদিম পরিচয় দিয়ে টাকা দ্বিগুণ করে দিবে বলে। কয়েকজন সহযোগী প্রতারক আশেপাশে ওৎ পেতে থাকে। এসময় রায়নার কাছ থেকে ৫১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র।
এঘটনায় ওই নারী থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্তে নামে। কিন্তু সিসিটিভিতে প্রতারকদের চেহারা ও ব্যবহৃত গাড়ি স্পষ্ট না থাকায় বিপাকে পরে পুলিশ। শেষে গাড়ির সামনের গ্লাসে সাটানো একটি নির্বাচনী পোস্টারের সূত্র ধরে খোঁজ নেয়া শুরু হয়। পুলিশ জানতে পারে, শ্রীমঙ্গল-হবিগঞ্জ রোডের সিএনজি শ্রমিকদের নির্বাচন সম্প্রতি শেষ হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজনগর থানার এসআই শওকত মাসুদ ভূঁইয়া, এসআই সুলেমান আহমদ, এসআই উবায়েদ হোসেন ও এসআই আজিজুল গফফার শ্রীমঙ্গল পৌরশহরের খাসগাঁও এলাকায় অভিযানে যান। সেখান থেকে কমলগঞ্জের উত্তর বালিগাঁও গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য সালাউদ্দিনকে (৪৩) অটোরিক্সাসহ আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের সদস্য শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের মহাজিরাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল মুসলিম (৪২) ও শ্রীমঙ্গলের জালালিয়া রোড দক্ষিনের সিরাজ মিয়ার ছেলে আনোয়ার মিয়া ওরফে আয়নাকে আটক করা হয়। প্রথমে তারা ঘটনার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করলেও পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখালে তারা প্রতারণার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ওই রাতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সহযোগীদের আটক করতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয় বলে পুলিশ জানায়।
এদিকে রায়না বেগম ছাড়াও একই কায়দায় গত ৯ মার্চ রাজনগর সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ খারপাড়া গ্রামের খেলা বেগমের কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকা ও এর পাঁচদিন পর রাজনগর বাজারের জনতা ব্যাংকের সামনে থেকে গ্রাম রাজনগরের পারভীন বেগমের ৫০ হাজার ৭০০ টাকা প্রতারকরা নিয়ে যায় বলে দাবি করেন ভূক্তভোগী নারীরা।
এব্যাপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আদমপুরের রায়না বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে আমরা প্রথমে সিএনজি চালককে আটক করি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে তার অন্য সহযোগীদের নামও জানিয়েছে। এঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের আটক করতে অভিযান অব্যহত আছে। আটক করা আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ সোহেল/নাজাত