সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির উন্নতি সাধন করা সম্ভব নয়। বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষার্থীদেরকে আকোকিত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখাতে হবে। আব্দুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো জাতীয় নেতা এই হাওরাঞ্চলের কৃতি সন্তান। বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রীও এই হাওরাঞ্চলেরই সন্তান। তাদের মতো বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনেক মেধাবী রয়েছে। আজকের শিক্ষার্থীদেরকে আগামী দিনের জন্যে গড়ে তুলতে হবে। 


তিনি গত মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তাড়ল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান, বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সিলেট প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ কাউসার চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দিরাই উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা পারমিতা দাসের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন,দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুর রহমান মামুন ও দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী মো. মোক্তাদির হোসেন।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র দিরাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহন চৌধুরী, দিরাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লিটন ও তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য সুমন চৌধুরী বক্তব্য দেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছাইনুল হক চৌধুরী। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী আরও বলেন, বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গৃহহীন মানুষকে জায়গাসহ গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছে। সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সকলকে নিজনিজ অবস্থান থেকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুর রহমান মামুন বলেন, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারীর মতো একজন মহান ব্যক্তির হাত ধরে এর যাত্রা শুরু হয়। আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সুনামগঞ্জে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী সুজাত আহমেদ চৌধুরীর অবদানের কথা তুলে তার স্মৃতি রোমন্থন করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী মাওলানা নুরুল আজিজ চৌধুরী।গীতা পাঠ করেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দিলীপ সরকার।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক ৫ সভাপতি যথাক্রমে সিরাজুল হক চৌধুরী, মুশাহিদ চৌধুরী, মুজাহিদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও আব্দুর রউফ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।শিক্ষার্থীরা অতিথিবৃন্দকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন। জেলা প্রশাসক কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা তুলে দেন।অনুষ্ঠানে দিরাই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনি রায়,তাড়ল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহমদ চৌধুরী, সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী,বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিক চৌধুরী,তাড়ল উন্নয়ন কমিটির সভাপতি রুনু মিয়া চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হোসেন চৌধুরী,তাড়ল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আবু তাহের,নিলীমা বেগম নিলু,নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, মামুনুর রশিদ চৌধুরী, ফয়সল আলম চৌধুরী, আব্দুস সালাম মেম্বার ও ছাতির মিয়া চৌধুরীসহ এলাকার বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।বাংলাদেশ বেতারের উপস্থাপক এম. এস. সুমনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক, সিলেট  জেলার অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট শামসুল ইসলাম ও বিশিষ্ট আইনজীবী তাহির রায়হান চৌধুরী (পাবেল)।

সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা সাহেদ মোশাররফ কটাই মিয়া,বাউল সূর্য লাল দাস,শাহ আলী নুর, তোশিবা, এম.রহমান, সুবর্ণা পুজা, আরিফ দেওয়ান ও ঝিনুক সংগীত পরিবেশন করেন।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/পল্লব-২১