কিয়ামত পর্যন্ত বাংলাদেশ থাকবে, কোন না কোন সরকারও থাকবে। আজ জনৈক নেতার বক্তব্যে শুনলামঃ তিনি বলছেন-রাজনীতি করতে হবে রাজনীতিবিদদেরকেই। তার কথার ইংগিত, যাঁরা পূর্বে অন্য পেশায় ছিলেন, রাজনীতি তাঁদের জন্য না। স্বয়ং আমি দেশে-বিদেশে বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে আজ ৪৬ বছরের ইংরেজি ভাষা ও ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক, বিসিএস ও পিএইচডি।


আমি কখনো রাজনীতি-নামক পেশাটিতে যুক্ত হই নি। কারণ, আ-ছাত্রজীবন ফার্স্ট হয়ে হয়ে ঐ পেশাতে যুক্ত হলে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াতেন কি সেকেÐ-ক্লাশ বা থার্ড-ক্লাশগণ? আজ আমিও যদি চাইতাম, হয় তো কোন এক উপদেষ্ঠা হতে পারতাম; তবে আল্লাহর কসম, এর বিন্দুমাত্র খায়েশও আমার নেই। তবে জনৈক ঐ নেতা কস্মিনকালেও তো বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেন না। 
আর, অনেকে আবার বলেনঃ ‘রাজনীতি’ নাকি  কোন পেশা না, ওটা নাকি ‘নেশা’; আমি জোর দিয়ে বলতে চাইঃ মানুষকে বোকা বানানোর ফন্দি আর পান না। আমরা যেন ভূলে না যাই, গোটা পাবলিক আমরা উচ্চ-শিক্ষিতদের চাইতেও অনেক বেশি বুদ্ধিমান। তারা সবাই জানে, রাজনীতি হচ্ছে সকল পেশার বাপ। ব্যতিক্রম শুধু এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার; এঁরা মূলত কেউ রাজনীতিবিদ না, দেশের দুঃসময়ে এঁরা এসেছেন/দেশের হাল ধরেছেন বাধ্য হয়ে ও মাতৃভূমির মায়ায়; কারণ, রাজনীতির মাঠ থেকে আজকের ঐ পতিত সরকারকে দেড় দশকের আধিক সময়েও বিতাড়িত করা যায় নি। এ বাস্তব কথাটি ভূলে গেলে চলবে না। যাক, দেশ-মাত্রিকার এ ক্রান্তিলগ্নে আমি চাই ২০ কোটি মানুষের ইস্পাতসম ঐক্য, নূন্যতম কোন বিভেদ নয়।


তবে, মনে রাখতে হবে, আজ যদি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস না হয়ে অন্য কেউ হতেন, তা হলে জুলাই-আগষ্টের ঝরা-প্রবাহিত রক্ত-বন্যার উপর দিয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের মাত্র এক মাসের মধ্যেই কোন্ দিন যেন এসে মসনদে আবারও বসে পড়ত। আর, জুলুম-নির্যাতন আরম্ভ হত পূর্বের চাইতে ১০০০% এর অধিক গতিতে। এমনিতেই এক উপদেষ্টা তো শপথ নেয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই বিতাড়িতদেরকে দাওয়াত দিয়েছিলেনঃ তড়িৎ দেশে ফিরে এসে দল গোছানোর জন্য, পাবলিক এ কথা ভুলে নাই, ভুলবেও না, উনাকে মাফও করবে না।
তাবৎ দুনিয়ার ইতিহাস বলেঃ যে কোন বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যদি কোন বিপ্লবি সরকার ক্ষমতায় আসে, তার বাধাধরা কোন মেয়াদ থাকে না। কোন পতিত সরকারের পদত্যাগ লাগে না, যে পালিয়ে গেছে, তার আবার পদত্যাগ-পত্র কী? তার শাসনতন্ত্রও অটোমেটিক্যালি বাতিল হয়ে যায়, কারণ, বিপ্লবি সরকার তো ঐ শসনতন্ত্রের মধ্য দিয়ে আসে নি। তাই, এ ক্ষেত্রে পূর্বেকার শাসনতন্ত্র ১০০০% অকার্যকর। 
অতএব, আমাদের এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাবতীয় সংস্কার শেষেই বিদায় নেবে। আর সংস্কারে কয় মাস, কয় বছর লাগবে, কেউ তা আগে-ভাগে বলতে পারবে না। তাই, আজকের এ সরকারকে আমি একটি অনুরোধ করবঃ আপনারা সংস্কারের একটি লিস্ট করুন, প্রয়েজনে সিলেটে বসে আমিও একে একে লিস্ট দিয়ে আপনাদেরকে সহযোগিতা করতে পারব। যাক, দেশ-মাত্রিকার এ ক্রান্তিলগ্নে আমি চাই ২০ কোটি মানুষের ইস্পাতসম ঐক্য, নূন্যতম কোন বিভেদ নয়। ইন শা আল্লাহ, যদি আপনারা চান, দেখা যাবে সংস্কারে কয় বছর লাগতে পারে। সমুদয় সংস্কারান্তে, নির্বাচন দিয়ে, শুধু তখনই আপনারা গুডবাই বলতে পারবেন। ১৬ বছরে আমরা ২০ কোটি মানুষ যা পারি নি, তার একটি অংশের আম ছাত্র-জনতা জালিমের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়ে রক্তের বন্যা বইয়ে এক মাসে তা তারা দেখিয়ে দিয়েছে চোখে আঙ্গুল দিয়ে। তাই মনে পড়ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের “যৌবনের গান” প্রবন্ধটির কথা।
তবে সত্যি কথা স্বীকার্য যে, আমরা পুরো ২০ কোটি মানুষই কোন না কোন ভাবে এ বিপ্লবের বৈধ ভাগিদার।    
এবার আসল কথায় আসি। সরকারের প্রতি সংস্কারের ফিরিস্তি ঃ 
১. আমাদের নতুন শাসনতন্ত্র আমরাই প্রনয়ন করব। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, দেশের মানুষের জন্যই শাসনতন্ত্র, দেশের মানুষ শাসনতন্ত্রের জন্য নয়/নই। হে বর্তমান সরকার মহোদয়, এ গুরু-কাজে বিশিষ্ট-অভিজ্ঞজনদেরকে যথাশীঘ্র লাগিয়ে দিন, আর, এতে সময়ও বেঁধে দিন।

২. আমাদের দেশে কোন রাজা নেই, আর আমরা কারো প্রজাও নই। আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক। আর আমাদের কোন রাজ-দরবারও নেই। আমাদের আছে দু’টি ভবন=বঙ্গভবন ও গণভবন। তাই, আমাদের মাতৃভূমির নাম হবে “জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ” (People’s Democratic Bangladesh), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নয়। ঔপনিবেশিক মানসিকতা নিয়ে আমরা আর কতদিন চলব? কে কবে অনুবাদ করেছে, তা নিয়ে আজও আমরা বসে আছি। ফরাসী ভাষায় আছেঃ “ট্রেডিটোরি ট্রেডিউটোর”, অর্থাৎ এ্য ট্রান্সলেটর ঈজ এ্য বিট্রেয়ার, অর্থাৎ অনুবাদক হচ্ছেন একজন বিশ^াসঘাতক। এরকম কথা ল্যাটিন ভাষায়ও আছে।
৩. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, এর পরিবর্তে আমাদের সরকারের নাম হবে “জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, RbMYZš¿x evsjv‡`k miKvi, People’s Democratic Bangladesh Govt.”। 
৪. রাজপথের নাম হবে “জনপথ”/“গণপথ”।
৫. রাজধানীর নাম হবে দেশের “আত্মানগর” বা “প্রাণনগর” বা এর চাইতে উত্তম কোন নাম। আমরা কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ে রাজনীতি-বিজ্ঞান পড়াই না, পড়াই “রাষ্ট্রবিজ্ঞান”।
৬. আমাদের দেশ আছে, রাষ্ট্র আছে। তাই রাজনীতির নাম হবে “দেশনীতি” বা “রাষ্ট্রনীতি”। 
বিচার, সংস্কার, সব শেষে নির্বাচন ঃ
 ৭. রাজনীতিবিদদের নাম হবে “রাষ্ট্রনীতিবিদ” বা “দেশনীতি- বিদ”।
৮. রাজনৈতিক শব্দটি হবে “দেশনৈতিক”/“রাষ্ট্রনৈতিক”।
৯. পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় হবে “বিদেশমন্ত্রণালয়”, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন “বিদেশমন্ত্রী”। আমারা আগে ভাগেই কাউকে ‘পর’ বানাতে যাব কেন? আমি স্বয়ং ৭ বছর চাকুরি করেছি কোন পররাষ্ট্রে নয়, করেছি বিদেশে। আমাদের কর্মী- ভাইয়েরা পররাষ্ট্রে যান না, যান বিদেশে। আমাদের রাষ্ট্রপতি মেডিক্যাল চেক-আপের জন্য পররাষ্ট্রে যান না, যান বিদেশে। আমাদের রেমিট্যান্স আসে পররাষ্ট্র থেকে নয়, বিদেশ থেকে। আমাদের গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে শুনা যায়=বিদেশির বউ, বিদেশির পোলা, তার বাপ বিদেশে থাকে, আর বলিস না-এদের টাকা তো বিদেশের টাকা, ইত্যাদি। বুঝা যায়, গ্রামীন মানুষজন আমরা শিক্ষিতদের চাইতেও উত্তম ভাষা জানেন।
১০. প্রশাসকের নিচে আরেক প্রশাসক থাকতে পারে না, এতে উপরের প্রশাসকের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। তাই, জেলা-প্রশাসকের পদবীর নাম হবে ‘জেলা নির্বাহী অফিসার’ (ডিএনঅ), আর বিভাগীয় প্রধানের নাম হবে “বিভাগীয় ইক্জিকিউটিব অফিসার (ডিইঅ)” ।
১১. ‘বিডিআর’ শব্দটি পাকিস্তানি আমলের, তাই ওটা অতীত, আমরা লজ্জাকর ও দুঃখজনক অতীতে ফিরে যেতে পারি না। ‘বিজিবি’ শব্দটি মানহানিকর, দুর্বল একটি শব্দ,কারণ, গার্ড অর্থ দারওয়ান বা চৌকিদার বা স্টুয়ার্ড। জনি না, ওটা আমাদের দেশের কোন্ অতি-উর্বর মগজ থেকে এসেছে, না বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। অতএব, এ বাহিনির সম্মানজনক ও অকুতভয় নাম হবে “বাংলাদেশ বর্ডার ফোর্স” (বিবিএফ) বা “বাংলাদেশ বর্ডার ব্যাটেলিওন” (বিবিবি)। হে স্বার্থহীন সরকার! যলদি এটা করুন।
১২. আর ৫৭ জন দেশপ্রেমিক ও চৌকুষ সেনা-অফিসারের নীলনক্সার হত্যার ইক্জাম্পুলারি বিচার দ্রæত সমাপ্ত করুন। সাথে সাথে ঐ সকল মা-বোনদের নির্মম হত্যাজজ্ঞেরও বিচার নিশ্চিৎ করুন। সকলের ক্ষতিপূরণও আদায় করুন।
১৩. জুলাই-আগষ্টের শহিদদের সকলের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দিন, আহত-পঙ্গুদের সম্পূর্ণ চিকিৎসা-খরচ ও ক্ষতিপূরণ তড়িৎ গতিতে আদায় করুন।
১৪. দলিল-প্রমান সাপেক্ষে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধাদের তালিকা দেশবাসীকে পরিষ্কারভাবে অবগত করুন।
১৫. তিন তিনটি কালো রাতের ডামি নির্বাচনের ফলে ভোটের উপর থেকে দেশবাসী-ভোটারদের আস্থা সম্পূর্ণ উঠে গেছে। ভোটের প্রতি তাদের এক ধরনের ঘৃণা, ক্ষোভ ও অনিহা এসে গেছে। তাদের ভোট-সাইকোলজি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। তাই, ব্যাপক প্রচারনার মধ্য দিয়ে দেশবাসিকে নিজ নিজ ভোট প্রয়োগের নিশ্চয়তা দিন। এটি হবে আপনাদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ, তাতেও আপনাদেরকে পাশ করতে হবে। ভোটারদের সাইকোলজিক্যাল ও ক্রোনিক ভোট-ডিযিয এর ইতি ঘটাতে হবে। এ জন্য আপনাদের সময়ও ঢের বেশি লাগবে। তবে আপনারা তো তত্বাবধায়ক সরকার না, যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইলেক্সন দিয়ে কোন একটি দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে যাবেন। গ্রামবাংলার মানুষ আগে বলুক-এবার নির্বাচন দিন, আমরা ভোটকেন্দ্রে অবশ্যই যাব। কোন দলের কথায় আপনারা নির্বাচন দিতে পারবেন না। অন্যতায় জরীপ চালানঃ কত র্পাসেন্ট লোক কবে নাগাদ ভোট চায়, অথবা এ ব্যাপারে একটি গণভোটের ব্যবস্থা করুন। ভোটারদের সর্বশেষ তালিকা হালনাগাদ করুন, আপনাদের কাজের শেষ নেই, পড়ে আছে শুধু কাজ আর কাজ।
ভোটারদের ভোটমুখি করা একটি বিশাল কাজ ও সংস্কার, ১৬ বছরে তারা ভোট ভুলে গেছেন, ভোটের প্রতি তারা আস্থাহীন, এ আস্থা ফিরিয়ে আনতেই সময় লাগবে ৫ বছর। তারা এখন আর কোন রাজনৈতিক দলকেই বিশ^াস করতে পারছেন না। অতএব, ৫ বছরের মধ্যে কোন নির্বাচন নয়। 
১৬. ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, এমপি-রা তো গুÐা বাহিনি পালে-ই, এমন কি ওয়ার্ড-মেম্বারও পালে, কারণ, আজীবন-ই তো আমি ক্ষমতায় থাকতে পারব! এতে সবচেয়ে বড় ক্ষতি চারটিঃ 
ক) নতুন নেতৃত্ব গজায় না, 
খ) ব্যক্তি হয়ে যায় বেপরওয়া, 
গ) আগাছার মত বেড়ে যায় দুর্নীতি, 
ঘ) উঠে আসে পরিবারতন্ত্র।
অতএব, দেশের সিনিওর-সচেতন আপাদমস্তক একজন শিক্ষক-সুনাগরিক হিসেবে আমার সাফ কথাঃ ওয়ার্ড মেম্বার থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী/রাষ্ট্রপতি-সকলের মেয়াদ হবে হয় তো চার বা পাঁচ বছর, এবং একই ব্যক্তি সর্বমোট দু’বারের অধিক দাঁড়াতে পারবেন না। দেখবেন, সর্বমোট ৮ বা ১০ বছর পর উনি হয়ে গেছেন ধুম পাবলিক, পিঠের চামড়া উঠে যাওয়ার ভয়ে উনি দুর্নীতি করবেন না। এখন তো মা শা আল্লাহ, গদি তো পেয়েছি, একেবারে বেহেশেÍ যাওয়ার টাকাও জমিয়ে ফেলব!    
১৭. বর্তমান জাতীয় সংগীতে স্বদেশের নাম একবারও নেই। এটি লিখার প্রেক্ষাপটও আমরা সবাই জানি। বিদেশি অধ্যাপকদেরকে আমি বুঝাতেই পারি নি যে, রবীন্দ্রনাথ বাঙ্গালি কবি। তাঁদের পরিষ্কার মন্তব্যঃ তিনি তো আল-হিন্দ্ বা ভারতীয় কবি। এ ব্যাপারে যা করার, তা এখনই করতে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকাকেই বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
১৮. আজকের এ বিপ্লবি সরকারই পতিত সরকারের সকল বিচার শেষ করবে স্বাধীন-নিরপেক্ষ আদালতের মাধ্যমে। তবে, পতিত সরকার, পুলিশ, অফিসার, দুর্নীতিবাজ ও অন্যান্য সহ নতুন আসামি যদি হয় ২০০০ জন, বলেন, সুবিচার নিশ্চিৎ করতে কত বছর লাগতে পারে? এ নিবন্ধে উল্লেখিত কোন সংস্কার বাকি রেখে বা অপরাপর সেক্টোরের সকল সংস্কার পূর্ণ না করে এ সরকার বিদায় নিতে পারে না। নির্বাচিত দলীয় সরকার আসিলেই কী ঘোড়ার ডিম সংস্কার করবে বা করতে পারবে, তা এখনই সহজেই অনুমেয়। ভাগ্যিস, আজ দেশ একজন অপ্রতিদ্বন্দি প্রধান উপদেষ্টা ও যুব-যুবা-ক্যাবিনেট পেয়েছে।
১৯. পুলিশের লগো বদলাবার কথা শুনেছিলাম, পরে আর খোঁজও নেই নি, তাই কিছু বলতেও পারছি না। আর, বিডিআর হত্যাকাÐের পর বিজিবি-র ক্ষেত্রে লগো-র কী হয়েছিল জানি না, তবে এবার যদি বিজিবি-র ক্ষেত্রে আমার, উপরে প্রস্তাবিত কোন নাম দেয়া হয়, তা হলে তার লগো কী হবে, তা-ও ফইনাল করা দরকার। অনেকে বলছেনঃ প্রায় ১০/১১ মাস হতে চল্লো, কিন্তু নজরে পড়ার মত তেমন কোন সংস্কারই এখনো হয় নি। ভিসি/ট্রেজারারের শূন্য পদে নতুন নিয়োগ কোন সংস্কার নয়, ট্রান্সফার ইত্যাদিও তেমন কোন সংস্কার নয়।
২০. আর, ভবিষ্যতে দেশে এত এমপি-মন্ত্রীর আদপেই কোন দরকার নেই, এগুলোর সংখ্যাও এ সরকারই নির্ধারন করে যাবে। স্বজনপ্রীতি ও ডান-পেশি শক্তি বাড়াবার জন্য পদার্থ-অপদার্থ যে কোন কাউকে মন্ত্রী-এমপি বনানোর বিপদই বেশি।
২১. দেশে মানুষ ২০ কোটি। লক্ষ লক্ষ গ্রাজুয়েট বেকার। খুব দ্রæতই সেনাবাহিনির সংখ্যা বাড়িয়ে করতে হবে নূন্যতম আট লক্ষ। এ চ্যালেঞ্জও এ সরকারকে নিতে হবে। বিদেশি নাগরিকদেরকে নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে দিয়ে ঐ হার্ড কারেন্সি আমাদের নিজ দেশেই রাখতে হবে। আর, সেখানে আমাদের গ্রাজুয়েটরা নিয়োগ পাবে, কমবে বেকারত্বের অভিশাপ।
২২. আন্দোলনে অনে..ক সিনিওর শিক্ষার্থীর অনে..ক সময় ও পড়াশুনা নষ্ট হয়েছে। এগুলোর কম্পেনসেইট করার নিমিত্তে দ্রæত আরও একটি বিশেষ বিসিএস ক্যাডার/নন্-ক্যাডার পরীক্ষা নিয়ে ১০ হাজার লোকবল নিয়োগ দিতে হবে, আর, এদের বয়স-সীমা স্পেশ্যালী শুধু একবারের জন্য করতে হবে ৩৬। এ সব-গুলো ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, সময় যা-ই লাগুক, লাগাবেন। তাহলে মানুষ সংস্কার দেখতে পাবে। এ রকম হাজারো সংস্কারের শেষ নেই। অধিকন্তু, ৫৩/৫৪ বছরের জঞ্জালের শেষ তো নেই-ই।

প্রিয় দেশবাসি, 
এখন কবে পরবর্তী নির্বাচন দেয়া উচিৎ হবে, তা নির্ধারন করবেন এ দেশের নাগরিকগণ।

 

লেখক: প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ, ইংরেজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও ২৪ বছরের বিভাগীয় প্রধান, বিভাগের সাবেক জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,  বর্তমানে ভিজিটিং প্রফেসর, সিলেট সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সিলেট।